Highlights

ইউটিউবে এক সপ্তাহের জন্য নিষিদ্ধ স্কাই নিউজ অস্ট্রেলিয়া

Published

on

এক সপ্তাহের জন্য ইউটিউবে নতুন কোনো কনটেন্ট আপলোড করতে পারবে না স্কাই নিউজ অস্ট্রেলিয়া। ইউটিউব বলছে, কোভিড-১৯ নিয়ে ভুয়া তথ্যের প্রচার বন্ধের লক্ষ্য নিয়ে তৈরি নীতিমালা ভঙ্গের কারণে অস্ট্রেলিয়ার ওই সংবাদমাধ্যমটির বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

‘থ্রি-স্ট্রাইক’ নীতির আওতায় স্কাই নিউজ অস্ট্রেলিয়ার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ নীতিতে প্রথমে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও, তিনটি স্ট্রাইক হয়ে যাওয়ার পর স্থায়ীভাবে চ্যানেল মুছে দেয় ইউটিউব।

ঠিক কোন কনটেন্টের কারণে এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে তা সুনির্দিষ্টভাবে জানায়নি ইউটিউব। তবে যে কনটেন্টের জন্যে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেটি “বাস্তব-বিশ্বে ক্ষতি সাধন করতো” বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

অন্যদিকে, ইউটিউবের সিদ্ধান্তকে স্বাধীন চিন্তা ক্ষমতার উপর আক্রমণ হিসেবে দেখছেন স্কাই নিউজ অস্ট্রেলিয়ার ডিজিটাল সম্পাদক জ্যাক হাফটন। সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে তিনি বলেছেন, যদি অস্ট্রেলিয়ার কোভিড-১৯ নীতিমালা নিয়ে আলোচনার কণ্ঠরোধ করা হয়, তাহলে “আমাদের রাজনৈতিক নেতারা জনসাধারণের সমালোচনা এড়িয়ে, সমর্থনযোগ্য কোনো কারণ ও জবাবদিহিতা ছাড়া যা ইচ্ছা তাই করার নিরাপত্তা পেয়ে যাবেন”।

মিডিয়া মুঘল খ্যাত রুপার্ট মারডকের নিউজ কর্পোরেশনের অধীনস্থ একটি প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় রয়েছে স্কাই নিউজ অস্ট্রেলিয়া। ইউটিউবে ১৮ লাখ ৫০ হাজার সাবস্ক্রাইবার রয়েছে সংবাদমাধ্যমটির। বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইউটিউবে নতুন কনটেন্ট আপলোডের উপর এই নিষেধাজ্ঞা প্রতিষ্ঠানটির গুগল থেকে আয়ের প্রবাহে প্রভাব ফেলতে পারে।

ইউটিউব এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “স্থানীয় এবং বৈশ্বিক স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার ভিত্তিতে কোভিড-১৯ চিকিৎসা সংক্রান্ত ভুল তথ্যের প্রচার রোধে স্বচ্ছ ও প্রতিষ্ঠিত নীতিমালা” রয়েছে তাদের।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে ইউটিউবের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, “এমন কনটেন্টে অনুমোদন দেওয়া হয় না যা কোভিড-১৯ এর অস্তিত্বকে অস্বীকার করে” অথবা “ভাইরাস ঠেকাতে বা চিকিৎসা করতে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন বা আইভারমেসটিন” ব্যবহারে মানুষকে উৎসাহিত করে। এর কোনোটিই কোভিডের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রমাণিত হয়নি।

ইউটিউব মুখপাত্র আরও বলেছেন, প্রশ্নবিদ্ধ ভিডিওটিতে “প্রাসঙ্গিক কিন্তু পাল্টা তথ্য তুলে ধরা হয়নি”। স্কাই নিউজ অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, তারা পুরোনো কিছু ভিডিও খুঁজে পেয়েছে যা ইউটিউবের নীতিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক ছিল। এ ছাড়াও সংবাদমাধ্যমটি বলছে, “সম্পাদকীয় এবং কমিউনিটি প্রত্যাশা পূরণের বিষয়টিকে গুরুত্বের” সঙ্গে নিচ্ছেন তারা।

তাদের কোনো উপস্থাপক কোভিড-১৯ এর অস্তিত্ব অস্বীকার করেনি বলেও দাবি করেছে সংবাদমাধ্যমটি।

বর্তমানে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে লকডাউনের মধ্য দিয়ে দিন পার করছেন অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকরা। দেশটিতে মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশেরও কম দুই ডোজ করে টিকা পেয়েছেন।

সম্প্রতি স্কাই উপস্থাপক অ্যালান জোনসের মন্তব্য অস্ট্রেলিয়ায় বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। জুলাইয়ের ১২ তারিখ দেশটির এমপি ক্রেইগ কেলির সঙ্গে সম্প্রচারকালে জোনস ও কেলি দু’জনেই দাবি করেন ডেল্টা সংস্করণ মূল ভাইরাসের মতো ভয়াবহ নয় এবং টিকা এ ব্যাপারে সহযোগিতা করবে না।

এরই মধ্যে স্কাই নিউজ-এর ওয়েবসাইটে এ ব্যাপারে ক্ষমা চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এই প্রসঙ্গে সিডনির রেডিও উপস্থাপক রে হ্যাডলি বলেন, জোনসের এই কাণ্ড “ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিকদের, টিকা বিরোধীদের… ওই সংখ্যালঘুদের কাছ থেকে সমর্থন পাওয়ার রাস্তা তৈরি করে দিয়েছে যারা মনে করেন ভাইরাস সাধারণ ফ্লুয়ের চেয়ে বেশি কিছু নয়”।

অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার ডেইলি টেলিগ্রাফও তাদের জন্য জোনসের লেখা কলাম প্রকাশ করা বন্ধ করে দিয়েছে জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে।

গত দুই বছরে ইউটিউব কয়েক ডজন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর মধ্যে কিছু কোভিড-১৯ সংক্রান্ত হলেও অধিকাংশই বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের কারণে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Trending

Exit mobile version