নিউজ ডেস্ক:
ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিপরীত লিঙ্গের কারও সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন বাংলাদেশে বসবাসরত চার নাইজেরিয়ান নাগরিক। একপর্যায়ে দামি উপহার পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে অভিনব পন্থায় হাতিয়ে নেন মোটা অঙ্কের টাকা। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত রাজধানীর কাফরুল ও পল্লবী থানাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের চার জন ও সহযোগী এক নারীকে গ্রেফতার করে র্যাব ৪ এর একটি দল।
আটককৃতরা হলেন ওনোরাহ নামদি ফ্রাঙ্ক (৩২), উদেজে ওবিনা রুবেন (৪১), ম্যাকদুহু কেলভিন (৪১), ফ্র্যাঙ্ক জ্যাকব (৩৫) ও টুম্পা আক্তার (২৩)। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুইটি মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট, ব্যাংকে অর্থ জমা করার বই, চেকবই, ১২টি মোবাইল ফোন, একটি প্রাইভেট জিপ গাড়ি, নগদ তিন লক্ষাধিক টাকাসহ হোয়াটসঅ্যাপ-ইমো-ফেসবুকে কথোপকথনের স্ক্রিনশটের কপি জব্দ করা হয়।
শুক্রবার তাদের পাঁচজনকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় কাফরুল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের দশ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম দেব্রবত বিশ্বাস প্রত্যেকের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ গ্রুপের টুম্পা আক্তার নিজেকে বাংলাদেশের কাস্টমস কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছিলেন।
গ্রেফতারদের কাছ থেকে দুইটি মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট, ব্যাংকে অর্থ জমাকৃত বই, চেকবই, ১২টি মোবাইল, একটি প্রাইভেট জিপ, নগদ তিন লক্ষাধিক টাকাসহ হোয়াটসঅ্যাপ-ইমো-ফেসবুকে কথোপকথনের স্ক্রিনশটের কপি জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় দণ্ডবিধির ৪০৬ ও ৪২০ ধারাসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়।
র্যাব-৪ জানিয়েছে, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করে দামি উপহার পাঠানোর লোভ দেখিয়ে অভিনব পদ্ধতিতে অনেক লোকের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সংঘবদ্ধ এ চক্র। দীর্ঘদিন যাবত ঢাকায় থাকা নাইজেরিয়ান নাগরিকদের একটি চক্র অভিনব কায়দায় বিপরীত লিঙ্গের ব্যক্তিদের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদেরকে আমেরিকান নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিত।
পরবর্তীতে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরির পর একপর্যায়ে দামি উপহার বাংলাদেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার জাল বিছানো হয়। কিছুদিন পর বাংলাদেশের কাস্টম কর্মকর্তা পরিচয়ে এক নারী উপহার আসার কথা বললে তার বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ে এবং পার্সেলটি ছাড়াতে কাস্টমস ভ্যাট/শুল্ক বাবদ টাকা জমা দিতে হবে বলে জানায়। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী সেই বিদেশি প্রতারক বন্ধুকে জানালে বাংলাদেশি বিভিন্ন ব্যাংকে টাকা পাঠানোর কথা বলে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে।