Tech News

মহাকাশে অত্যাধুনিক গোয়েন্দা উপগ্রহ পাঠাল ভারত

Published

on

মহাকাশ গবেষণায় আবারো সাফল্য পেল ভারত। বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে মহাকাশে অত্যাধুনিক গোয়েন্দা উপগ্রহ (রিস্যাট-২বি) পাঠিয়েছে ভারত। এর ফলে মহাকাশ থেকে শত্রুপক্ষের উপর আরও ভালোভাবে নজরদারি চালাতে পারবে নয়াদিল্লি।

এই উপগ্রহ ছবি পাঠাতে শুরু করলে ভারত মহাসাগরে কোনো চীনা যুদ্ধজাহাজ লুকিয়ে আছে কি না অথবা পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটিতে উগ্রপন্থীরা কী করছে, সেই গতিবিধি এক মুহূর্তে পৌঁছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীদের কাছে। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে পারবে ভারতীয় সেনারা।

আগের রিস্যাট পর্যায়ের উপগ্রহগুলির থেকে অনেক শক্তিশালী এই রিস্যাট-২বি। এই মুহূর্তে মহাকাশে আছে ভারতের রিস্যাট-১ এবং রিস্যাট-২ উপগ্রহ। কিন্তু এই দুটির থেকেও অনেক নিখুঁত ছবি পাঠাবে এই নয়া উপগ্রহ। দিনের মতোই রাতের বেলাতেও কাজ করবে এই উপগ্রহের শক্তিশালী রাডার। সমুদ্রপৃষ্ঠের ৫৫৭ কিলোমিটার উপর থেকে মেঘের আস্তরণ ভেদ করে শত্রুভূমিতে দৃষ্টি রাখতে পারবে এই নজরদারি উপগ্রহ। নজরদারির কারণেই এই উপগ্রহকে ডাকা ‘আকাশের গোপন চোখ’বা গুপ্তচর’উপগ্রহ নামেও।

কোনো একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর ছবি দিনে দুই থেকে তিনবার তুলতে পারবে ভারতের ৬১৫ কেজি ওজনের এই নতুন উপগ্রহ। এর ফলে কোনো অঞ্চলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কী পরিবর্তন হচ্ছে, তা নির্ভুল ভাবে বলতে পারবে রিস্যাট-২বি। পাকিস্তান ছাড়াও এই ‘গুপ্তচর’নজর রাখবে আরব সাগর, বঙ্গোপসাগর এবং ভারত মহাসাগরের উপর।

এই নিয়ে মহাকাশে মোট ৩৫৪টি কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠাল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। এই উপগ্রহ পাঠানোর সঙ্গেই মোট ৫০ টন ওজনে সামগ্রী মহাকাশে পাঠানোর কৃতিত্ব অর্জন করল ইসরো। আরও একটি কারণে এই কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানো বিশেষ কৃতিত্বের দাবি রাখে। এই উৎক্ষেপণে এই প্রথম ব্যবহার করা হল ভারতের নিজের বানানো প্রসেসর ‘বিক্রম’।

এই উপগ্রহের সফল উৎক্ষপণের পর ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থাকে অভিনন্দন জানিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন টুইট করেছেন, ‘ইসরো আমাদের আরও এক বার গর্বিত করল। এই উপগ্রহই হয়ে উঠবে আমাদের চোখ, সারা বছরের জন্য।’

২০০৮ সালের মুম্বই হামলার পরই এই ধরনের নজরদারি উপগ্রহের প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারে। সেই কারণে তড়িঘড়ি রিস্যাট-১ এর আগে মহাকাশে রিস্যাট-২ পাঠায় ভারত।

২০০৯ সালের ২০ এপ্রিল ইসরায়েলের তৈরি রিস্যাট-২ আকাশে পাঠিয়েছিল ভারত। ৫৩৬ কিমি উচ্চতা থেকে এই উপগ্রহ সারা বছর নজরে রাখে ভারতের সীমান্তে। সন্দেহজনক কিছু দেখলেই সেই খবর পৌঁছে যায় ভারতের সেনা এবং গোয়েন্দা সংস্থাদের কাছে। ২০১৬ সালে উরিতে সার্জিকাল স্ট্রাইক বা সাম্প্রতিক বালাকোট অভিযান করা হয়েছিল এই উপগ্রহের সাহায্যেই।

কিন্তু সেই রিস্যাট-২ এর থেকেও অনেক বেশি শক্তিশালী এই নতুন উপগ্রহ। এখানে ব্যবহার করা হয়েছে সিন্থেটিক অ্যাপারচার রেডার, যার ফলে উচ্চমানের ছবি তোলা যাবে আকাশ থেকে। নজরদারি ছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ অন্যান্য বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রেও কাজে লাগানো যাবে এই উপগ্রহ। সূত্র: আনন্দবাজার

Trending

Exit mobile version