Tech News

​প্রযুক্তির কিছু ভয়ঙ্কর দিক

Published

on

প্রযুক্তি ডেস্ক:
প্রযুক্তি ছাড়া বর্তমানে আমাদের জীবনের অনেক কিছুর কল্পনাই করা সম্ভব না। পৃথিবীর আজকের সভ্যতার যে এতো উন্নত তার বেশির ভাগই প্রযুক্তির কল্যাণে। তথ্য প্রযুক্তির এই বিপ্লবের মাধ্যমে সময়ের এগিয়ে যাচ্ছে আজকের বিশ্ব।

তবে বিশ্ব যেমন এগিয়ে যাচ্ছে তাতে মানব সভ্যতার জন্য কিছু খারাপ বা নেতিবাচক দিকও সৃষ্টি হচ্ছে। প্রযুক্তির যেমন আলোর দিক রয়েছে তেমনি অন্ধকারের দিকও রয়েছে। এমন কিছু নেতিবাচক দিক নিয়ে এবারের আয়োজন।

বিপর্যয়ে সমাজ, সংস্কৃতি ও সভ্যতা:
দেশের বিরাট এক জনগোষ্ঠী ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তির আসক্তির মধ্যে রয়েছে। ফলে দেশের সমাজ, সংস্কৃতি ও সভ্যতা এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন (এসব ক্ষেত্রে যথেষ্ঠ মাত্রায় নেতিবাচক পরিবর্তন এসেছে)। আর এর মূল ভুক্তভোগী হচ্ছে প্রায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষ।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনা তরুণদের মাঝে ফেসবুকের নেতিবাচক ব্যবহার প্রমাণ করে। প্রযুক্তির বন্ধুত্বের সূত্রে পরিবারের অসম্মতিতে পালিয়ে বিয়ে করা, পারিবারিক কলহ, অনৈতিক সম্পর্ক সাময়িক আবেগনির্ভর এ ধরনের সম্পর্কের অশুভ পরিণতি সামাজিক জীবনে নানা ধরনের অস্থিরতা তৈরি করছে। কারো সংসার ভাঙছে, কেউবা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে এবং কারো কারো জীবনটাই বিপন্ন হয়ে পড়ছে। আর এভাবেই বাংলাদেশের সামাজিক মূল্যবোধের দ্রুত অবক্ষয় হচ্ছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো সামাজিক অবক্ষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে।

নৈতিক স্খলন:
মুঠোফোনের অযৌক্তিক ব্যবহার তরুণ-তরুণীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা, যৌনহয়রানিসহ বিভিন্নসামাজিক অপরাধ বৃদ্ধি করছে। এক জরিপে দেখা গেছে, ইন্টারনেট, ইউটিউব, পর্ণগ্রাফি আসক্তিতে উন্নত দেশগুলোর প্রায় ৬৫% যুবসমাজ (১২-১৮ বছর) যৌন হয়রানি ও ধর্ষণসহ বড় বড় অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। যা সমাজের জন্য হুমকিস্বরূপ এমনকি পর্ণ আসক্তিতে প্রতি বছর আমেরিকার স্কুল পড়ুয়া ২,৮০,০০০ শিক্ষার্থী গর্ভবতী হচ্ছে যা পুরো সমাজ ও একটি রাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ।

প্রযুক্তি কাড়ছে শিশুর মনোযোগ:
প্রযুক্তি কেড়ে নিচ্ছে শিশু-কিশোরদের মনোযোগ। দিন দিন তারা অমনোযোগী হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে পাঠ্যবইকেন্দ্রিক পড়ালেখার প্রতি। তাদের তীব্র আকর্ষণ মোবাইলের প্রতি। কোলের শিশু থেকে শুরু করে কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী সবাই কমবেশি আসক্ত হয়ে পড়ছে মোবাইলসহ প্রযুক্তির বিভিন্ন ধরনের ব্যবহারের প্রতি। এ নিয়ে দুশ্চিন্তা আর অস্থিরতা বিরাজ করছে অভিভাবকদের মাঝে।

কানে ইয়ারফোন দিয়ে গান শোনা দুর্ঘটনার কারণ:
প্রায়ই দেখা যায় আজকালকার তরুণরা কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে গান শুনতে শুনতে রাস্তায় চলাফেরা করছে। কানে ইয়ারফোন থাকায় অনেক সময় রাস্তার সতর্ক সংকেত বা গাড়ি, সাইকেলের শব্দ শুনতে পায় না তারা। ফলে ঘটে দুর্ঘটনা। এ কথা জানান জার্মান হাসপাতালগুলোর জরুরি বা ‘এমারজেন্সি’ বিভাগের ‘ট্রমা সার্জারি’-র প্রফেসার রাইনহার্ড হফমান।

ডিসপ্লে থেকে জীবাণু শরীরে যায়:
স্মার্টফোন, ট্যাবলেট কিংবা আইফোন ছাড়া যেন আজকাল করোর চলেই না। যদিও এ সবে অসংখ্য জীবাণু, ছত্রাক আর ব্যাকটেরিয়া লুকিয়ে থাকে। এই জীবাণু থেকে কিন্তু আপনি অসুস্থ হতে পারেন। বিশেষ করে যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, তাদের জন্য এই ঝুঁকি আরো বেশি। তাই এগুলো নিয়মিত পরিষ্কার রাখা জরুরি।

ইন্টারেনেটে বই পড়া:
বই হাতে নিয়ে পড়াটা যেন আজকাল উঠেই যাচ্ছে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। আসলে আজকাল যে ইন্টারনেটে মুহূর্তের মধ্যেই সব রকম তথ্য পাওয়া যায়। অবশ্য আরাম করে বই হাতে নিয়ে পড়ার থেকে ইন্টারনেটে পড়লে যে বেশি ক্লান্ত বোধ হয়, তা অনেকেই হয়ত স্বীকার করবেন। আর এ কথাটিই প্রমাণ করেছেন জার্মানির ট্যুবিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।

কফি মেশিনে জীবাণু!
আজকাল নানা ধরনের কফি মেশিন পাওয়া যায় আর খুব সহজেই নানা স্বাদের কফি তৈরি করা যায়। একেক মেশিনের একেকটি বোতামে টিপ দিলে ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের কফি বেরিয়ে আসে। দেখলেই অবাক লাগে, তাই না? কিন্তু সেই মেশিনই নিয়মিত পরিষ্কার না রাখলে রয়েছে জীবাণুর ভয়। তাই সাবধান!

এখনই আমাদের এই ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিত।একটি সঠিক ধর্মীয় আদর্শ ধারণ করা উচিত যার মাধ্যমে আমাদের যুবসমাজ তাদের জীবনের লক্ষ্য সম্পর্কে সচেতন হবে এবং তারা হয়ে উঠবে এক একজন, মানবতার কল্যাণে-দেশের কল্যাণে, নিবেদিত প্রাণ। প্রকৃত ধর্মের শিক্ষার পাশাপাশি সঠিক প্রযুক্তির শিক্ষা আমাদের দেশ ও জাতিকে সম্বৃদ্ধি করে তুলবে। ইন্টারনেট ও অনন্য প্রযুক্তি ব্যবহারের ব্যাপারে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।

Trending

Exit mobile version