Highlights

টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে নির্মাণ হচ্ছে সাড়ে ৪শ’ টাওয়ার

Published

on

নিউজ ডেস্ক:
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে। সেজন্য সারা দেশে ৩৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে ৪শ’ টাওয়ার নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে টেলিটক। প্রকল্পের উদ্দেশ্য হাওড়, বাঁওড় ও দুর্গম এলাকায় টেলিটকের নেটওয়ার্ক স্থাপন করা। যাতে দেশের একজন মানুষও মোবাইল ও ইন্টারনেটের বাইরে না থাকেন।

নতুনভাবে স্থাপন করা টেলিটকের প্রতিটি টাওয়ার (বিটিএস) রেডিও লিংকের মাধ্যমে সংযুক্ত হবে। তবে কিছু জায়গায় কেবলের মাধ্যমেও টাওয়ারগুলোকে সংযুক্ত রাখা হবে। হাওড় বাঁওড় এলাকায় প্রতিটি টাওয়ারের উচ্চতা হবে ৩২ থেকে ৫০ মিটার পর্যন্ত। যাতে মানুষ অনেক দূর থেকেও নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। প্রকল্পটি আগামী বছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

জানা যায়, বর্তমানে টেলিটকের গ্রাহক সংখ্যা ৪৯ লাখ। সাড়ে ৪শ’ বিটিএস বেইজ স্টেশন) বা টাওয়ার নির্মাণ হলে আরো ১১ লাখ গ্রাহক বাড়বে। মূলত শুধু ওই ১১ লাখ গ্রাহক বাড়াই বড় কথা না, বরং দুর্গম এলাকার মানুষকে টেলিটকের নেটওয়ার্কের আওতায় আনাই হচ্ছে বড় উদ্দেশ্য। মোবাইল ও ইন্টারনেট কানেক্টিভির মধ্যে না আনতে পারলে দুর্গম এলাকার মানুষ আধুনিক সেবা থেকে বঞ্চিত হবে। কারণ বর্তমান বিশ্বে ইন্টারনেট সবার অধিকার। টেলিটক টাওয়ার নির্মাণের পর মোবাইল ব্রডব্যান্ড কানেক্টিভি এবং টু-জি, থ্রি-জি ও ফোর-জি কানেক্টিভি দেয়া হবে।

সূত্র জানায়, দেশে মোট ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করা হতো মাত্র সাড়ে ৭ জিবিপিএস (গিগাবাইট পার সেকেন্ড)। দেশের প্রায় ৪ হাজারেরও বেশি ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

এসওএফ তহবিলের মাধ্যমে দেশের ৪০টি দ্বীপ, চরাঞ্চলসহ দুর্গম এলাকায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে দেয়ার কাজ শুরু হয়েছে। তাছাড়াও অধুনালুপ্ত ছিটমহলসহ ৭৭২টি দুর্গম এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগ দেয়ার কাজ চলছে। ২০২১ সালে বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রথম স্তর অতিক্রম করবে। কিন্তু এটাই শেষ না, বরং বাংলাদেশকে দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম স্তর অতিক্রম করার প্রস্তুতি নিতে হবে।

ইতিমধ্যে ফাইভ জি নেটওয়ার্ক তৈরি করার জন্য কাজ শুরু করা হয়েছে। তাছাড়া সরকার দ্বিতীয় সাবমেরিন ও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণেরও কাজ শুরু করেছে। বর্তমানে দেশে এক হাজার ৮শ’ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হচ্ছে। আগামী বছরে এর পরিমাণ ২ হাজার একশ’ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথের প্রয়োজন হবে। কারণ দেশে ডাটার ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। কুয়াকাটা থেকে ব্যান্ডউইথ বাড়াতে পারবে সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি।

এদিকে এ প্রসঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানান, ভয়াবহ রূপে আবির্ভূত হবে ইন্টারনেট সভ্যতা। ২০০৮ সালে দেশে মাত্র ৮ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতো। বর্তমানে সাড়ে ১১ কোটি মানুষ ব্যবহার করছে। এই সময়ে এসে দুর্গম এলাকার মানুষ মোবাইল ও ইন্টারনেট থেকে বঞ্চিত হতে পারে না। তাদের মোবাইল যোগাযোগ ও ইন্টারনেট সুবিধা দিতে হবে।

এ কারণেই সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল (এসওএফ) থেকে সারাদেশে সাড়ে ৪শ’ টাওয়ার নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে টাওয়ারের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। দেশের এমনও অঞ্চল রয়েছে যেখানে কোনো মোবাইল অপারেটরের নেটওয়ার্ক পৌঁছেনি। টেলিটক সরকারের একটি প্রতিষ্ঠান। তার দায় রয়েছে মানুষের হাতে নেটওয়ার্ক পৌঁছে দেয়ার। ৩৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে মোবাইল অপারেটর টেলিটক। ইতিমধ্যে বেশকিছু জায়গায় কাজ শুরু হয়েছে। অনেক জায়গায় ‘সাইট সিলেকশনের’ কাজ চলছে। ২০২১ সালের জুনের মধ্যে টেলিটক সারাদেশে নেটওয়ার্ক বিস্তার করবে। তখন দেশের সব মানুষ নেটওয়ার্কের আওতায় চলে আসবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Trending

Exit mobile version