Highlights

এবারই প্রথম মহাবিশ্বের প্রাণশক্তি ব্যাখ্যায় সংকেত আবিষ্কার

Published

on

নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রথমবারের মতো বিজ্ঞানীরা সূর্যের অভ্যন্তরে ঘটে চলা কার্বন-নাইট্রোজেন-অক্সিজেন (সিএনও) ফিউশন চক্রকে ব্যাখ্যাকারী নিউট্রিনোকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। কার্বন-নাইট্রোজেন-অক্সিজেন ফিউশনটি ‘সিএনও’ নামে পরিচিত, যা সূর্যের অভ্যন্তরে হাউড্রোজেন থেকে হিলিয়াম সংশ্লেষণের প্রক্রিয়াকে ব্যাখ্যায় ব্যবহূত হয়।

১৯৩০ সাল থেকে তাত্ত্বিক ধারণার ওপর প্রস্তাবিত সিএনও ফিউশনকে ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে এটি একটি যুগান্তকারী উদ্ভাবন; যা নতুন সহস্রাব্দের পদার্থবিজ্ঞানের জন্য বিখ্যাত এক আবিষ্কার হিসেবে প্রশংসিত হচ্ছে। গবেষণা প্রতিবেদনটি গত বুধবার ন্যাচার জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

১৯৯০ সাল থেকে ইটালিয়ান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর নিউক্লিয়ার ফিজিকসে (আইএনএফএন) শুরু হওয়া গবেষণা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকা গবেষক গিওআসিনো রানুচ্চি বলেন, এটা সত্যিই সৌর ও তারকীয় পদার্থবিজ্ঞানের জন্য যুগান্তকারী এক আবিষ্কার। রোম থেকে ৬৫ মাইল উত্তরে অ্যাপেনাইন পর্বতমালার তলদেশে গড়ে ওঠা এই ইটালিয়ান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর নিউক্লিয়ার সেন্টার থেকে গবেষণা পরিচালনা করতে তারা আলট্রাসেনসিটিভ বোরেক্সিনো ডিটেক্টর ব্যবহার করেন। বোরেক্সিনো প্রকল্পের মাধ্যমে গবেষকেরা গত কয়েক দশক ধরে সূর্যসহ মহাবিশ্বের নক্ষত্রের নিউট্রিনোকে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করছেন।

এই প্রক্রিয়ায় বিজ্ঞানীরা হাইড্রোজেন থেকে হিলিয়াম তৈরির প্রধান নিউক্লিয়ার বিক্রিয়াকে প্রথমবারের মতো বিশদভাবে বুঝতে সক্ষম হয়েছেন। বেশির ভাগ নক্ষত্রেই হাইড্রোজেন থেকে হিলিয়াম তৈরিতে এই নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া ঘটে থাকে। সূর্যসম ভরবিশিষ্ট তারাদের ক্ষেত্রে যে প্রক্রিয়ায় শক্তি উৎপন্ন হয়, তার নাম প্রোটন প্রোটন চক্র। হাইড্রোজেনের ভর ১.০০৭৯৭ একক; সে হিসাবে চারটি হাইড্রোজেনের মোট ভর দাঁড়ায় ৪.০৩১৮৮ একক। অথচ একটি হিলিয়ামের ভর ৪.০০২৬ একক। এই প্রক্রিয়ায় ভরের একটি অংশ বাকি থাকে।

অতিরিক্ত এই ০.০২৯২৮ একক ভর সম্পূর্ণ শক্তিতে পরিণত হয় এবং শক্তির পরিমাণ আইনস্টাইনের বিখ্যাত ভর-শক্তি সমীকরণ E=MC2 সমীকরণ দ্বারা নির্ণয় করা হয়। এই হিসাবে সূর্যের ক্ষেত্রে প্রতি সেকেন্ডে ৬৭ কোটি টন হাইড্রোজেন পুড়ে ৪০ লাখ টন পদার্থ বিশুদ্ধ শক্তিতে পরিণত হচ্ছে। সূর্যের অভ্যন্তরে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ার পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বের অন্যান্য নক্ষত্রের অভ্যন্তরে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়াও বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছেন।

গবেষকেরা বলছেন, মহাবিশ্বে এমন অনেক নক্ষত্র রয়েছে, যেগুলো সূর্যের থেকেও কয়েক গুণ বড় এবং ভারী। এসব বড় নক্ষত্র সূর্যের থেকে অনেক বেশি উত্তপ্ত। ঐ সব নক্ষত্রে সাধারণত বেশি মাত্রায় সিএনও ফিউশন ঘটে। কিন্তু সূর্যের ক্ষেত্রে সিএনও ফিউশনের মাত্রা তুলনামূলক কম বলে অন্য নক্ষত্রের তুলনায় কম উত্তপ্ত।

বিজ্ঞানীরা সূর্যের নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া বিশ্লেষণের সময় যে নিউট্রিনোর সন্ধান পেয়েছেন, আলট্রাসেনসিটিভ বোরেক্সিনো ডিটেক্টরে তা খুবই কম পরিমাণে ধরা পড়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, প্রতিদিন সূর্যের অভ্যন্তরে লক্ষ-কোটি নিউট্রিনো ছোটাছুটি করলেও বোরেক্সিনো ডিটেক্টরে প্রতিদিন ধরা পড়ে মাত্র ৭ থেকে ১০টি নিউট্রিনো। ইয়াহু নিউজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Trending

Exit mobile version