Highlights

এক কোটি মায়ের ‘নগদ’ অ্যাকাউন্টে প্রাথমিক উপবৃত্তির টাকা

Published

on

নিউজ ডেস্ক:
ডাক বিভাগের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও শিক্ষা উপকরণ কেনার ভাতা বিতরণ করছে সরকার। মহামারীর মধ্যে সরকার গত তিন মাসে এক কোটি মায়ের ‘নগদ’ অ্যাকাউন্টে এক প্রান্তিকের উপবৃত্তির টাকা পাঠানো হয়েছে। এই দফায় ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে জুন প্রান্তিকের উপবৃত্তির আটকে থাকা সাড়ে চারশ টাকা পেয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি মাসে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের আরও দুই প্রান্তিকের উপবৃত্তিসহ ২০২১ সালের শিক্ষা উপকরণ কেনার ভাতা দেওয়া হবে। মহামারীর মধ্যে প্রাথমিকের উপবৃত্তি বিতরণের এই প্রকল্প বন্ধ ছিল প্রায় এক বছর। পরে গত ডিসেম্বরে ‘নগদ’-এর সঙ্গে চুক্তি করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। চুক্তির তিন মাসের মধ্যে প্রায় দেড় কোটি শিক্ষার্থী ও তাদের মায়ের তথ্যসহ ডেটাবেজ তৈরি করা হয়েছে।

সরকারের উপবৃত্তি প্রদান প্রকল্পের (তৃতীয় পর্যায়) পরিচালক অতিরিক্ত সচিব ইউসুফ আলী বলেন, জানুয়ারির শেষ থেকে শুরু করে মার্চ পর্যন্ত টাকা পাঠানো হয়েছে। এপ্রিলের মধ্যে প্রায় ১ কোটি মায়ের হাতে নগদের মাধ্যমে আবার টাকা পৌঁছে যাবে। প্রথমবার হওয়ায় কিছু ভুল-ত্রুটি হয়েছে। এবার আশা করছি বাকি দুটো কিস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও ভালো সার্ভিস পাব। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নগদের মাধ্যমে উপবৃত্তি ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণের ফলে সরকারের খরচও এক-তৃতীয়াংশে নেমে এসেছে। গত কয়েক বছর ধরে আরেক মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস শিওর ক্যাশের মাধ্যমে উপবৃত্তির টাকা বিতরণ করত সরকার। তাতে প্রতি হাজার টাকার উপবৃত্তি বিতরণে সাড়ে ২১ টাকা সার্ভিস চার্জ এবং ক্যাশ-আউট চার্জ লাগত। এখন সব মিলিয়ে প্রতি হাজারে সরকারের লাগছে সাত টাকা। মূল টাকার সঙ্গে ক্যাশ-আউটের খরচ পেয়ে যাওয়ায় সুবিধাভোগীদেরও বাড়তি কোনো অর্থ খরচ করতে হচ্ছে না।

রংপুরের তারাগঞ্জের জগদীশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক হোসনে আরা বলেন, এখন সরকার থেকে ক্যাশ-আউটের খরচ দিয়ে দেওয়ায় নিজদের খরচ ছাড়াই তারা টাকা তুলতে পারছেন। টাকা তুলতে এখন আর খরচ হচ্ছে না। ঝামেলাও কমে গেছে। এখন সহজেই বাসার পাশের এজেন্টদের কাছ থেকে টাকা তুলতে পারছি। তবে নতুন বিতরণ প্রক্রিয়ার পুরোপুরি সুবিধা পেতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন পাবনার সাথিয়ার শালঘর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ডেটাবেইজ তৈরির কারণে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছয় বছরের জন্য তথ্যগুলো একেবারে সংরক্ষিত থাকছে। ফলে বার বার এই তথ্যগুলো নেওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে না। তবে প্রযুক্তি সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকায় কিছু অভিভাবক কারিগরি সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছেন বলে জানান এই প্রধান শিক্ষক। তারা পিন সেট করাসহ কিছু টেকনিক্যাল বিষয় নিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন। আসলে একটি নতুন সিস্টেম প্রয়োগ, শুরুতে একটু ঝামেলা হয়, পরে হয়ত সহজ হয়ে যাবে।

নগদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে একটি চক্র অর্থ হাতিয়ে নিতে সুবিধাভোগীদের ফোন করে তাদের পিন ও ওটিপি জানতে চাইছে- এমন কিছু অভিযোগ তারা পেয়েছেন। সেজন্য তারা সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে। নগদ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, “আমরা সব সময়ই গ্রাহককে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করি। এ প্রকল্পটি আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। সরকারের এমন মহৎ উদ্যোগের সাথে থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের সহযোগী হতে পেরে আমরা গর্বিত।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Trending

Exit mobile version