Highlights

আয়ু বাড়ানোর ওষুধ আবিষ্কারের পথে বিজ্ঞানীরা!

Published

on

নিউজ ডেস্ক, টেক এক্সপ্রেস:
বহু দিন ধরেই মানুষের আয়ু বাড়ানোর উপায় খুঁজে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। এবার সেই পথের শুরু দেখতে পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক। বলছেন, তারা এমন একটি ওষুধ আবিষ্কার করেছেন, যা সেবনে মানুষের আয়ু বেড়ে যেতে পারে।

সায়েন্স ডেইলি যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার ডর্নসাইফ কলেজ অব লেটারস, আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের গবেষকরা এ বিষয়ক একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। প্রতিবেদনটি শুক্রবার (১০ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের জরাবিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল ‘জার্নাল অব জেরোনটোলজি : বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস’-এ প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদন মতে, ল্যাবরেটরিতে দুটি ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির জীবের আয়ু বাড়াতে সক্ষম হয়েছে মিফপ্রিস্টন নামে নতুন উদ্ভাবিত একটি ওষুধ। এই আবিষ্কার মানুষ ও অন্যান্য প্রজাতির প্রাণীর ক্ষেত্রে যুগান্তকারী সাফল্য আনতে পারে।

মাছির ওপর প্রয়োগে সাফল্য :

ড্রসফিলা নামে অতি পরিচিত ফলের মাছির ওপর গবেষণা চালিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেসের অধ্যাপক জন টাওয়ার ও তার দল। মাছির দেহে এই ওষুধ প্রয়োগ করে দেখা গেছে, পুরুষ মাছির সঙ্গে মিলিত হওয়া স্ত্রী মাছির জীবনের সময়সীমা বেড়ে যাচ্ছে।

সেই সঙ্গে তাদের জন্মদানের ক্ষমতা কমে যাচ্ছে অথচ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেড়ে যাচ্ছে, যা নিঃসন্দেহে বড় অগ্রগতি বলে মনে করা হচ্ছে। মিফপ্রিস্টন আরইউ-৪৮৬ নামেও পরিচিত। অনভিপ্রেত গর্ভধারণ রোধে প্রয়োগ করা হয়। কখনও ক্যান্সার নিরাময়ের কাজেও এই ওষুধ ব্যবহার করা হয়।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রজননকালে পুরুষ মাছিগুলো থেকে স্ত্রী মাছিগুলোর দেহে সেক্স পেপটাইড নামে একটি পদার্থ প্রবেশ করে। আগের এক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, সেক্স পেপটাইড স্ত্রী মাছির দেহে প্রদাহের সৃষ্টি করে। এর ফলে মাছিটি অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং অল্প দিনেই তার মৃত্যু হয়।

টাওয়ার ও তার দল ল্যাবরেটরিতে দেখেছেন, স্ত্রী ড্রসফিলা মাছিকে মিফপ্রিস্টন নামের ওষুধটি খাওয়ানোর পর প্রজননে অংশ নেয়া স্ত্রী মাছির সেক্স পেপটাইড পদার্থটি নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। এর ফলে মাছি আরও স্বাস্থ্যবান হয়ে ওঠে এবং অপেক্ষাকৃত দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে।

কিশোর হরমোন প্রভাব :

মিফপ্রিস্টন কীভাবে কাজ করে তা আরও ভালোভাবে বোঝার চেষ্টায় ওষুধটি খাওয়ার পর মাছির জিন, দেহের অন্যান্য উপাদান ও মেটাবোলিক প্রসেস তথা হজম প্রক্রিয়ার পরিবর্তন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন টাওয়ার ও তার দল।

এতে তারা দেখতে পেয়েছেন, পরিবর্তনের এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ভূমিকা রাখে জুভেনাইল হরমোন বা কিশোর হরমোন বলে একটি পদার্থ। এই হরমোন ডিম ফোটা থেকে পূর্ণবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত মাছির পুরো জীবনের বিকাশ নিয়ন্ত্রণ করে।

মানব শরীর নিয়ে আশাবাদ :

বিজ্ঞানীরা বলছেন, মিফপ্রিস্টন মাছির শরীরে যা করেছে, তার অনেকাংশ কাজই মানব শরীরে করে থাকে। এর দ্বারা প্রজনন শক্তি মানুষ হারায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। ফলে মানুষের আয়ুও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

টাওয়ার ও তার দল দেখেছেন, বহু প্রাণীর ওপরই একই রকমের প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে মিফপ্রিস্টন। ফলে এবার মানব শরীর নিয়ে আশা করতে শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা। যদিও এখনও বহু গবেষণা বাকি রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Trending

Exit mobile version